Tuesday, June 14, 2011

মুসলমানের হাসি : ০৬ - বেদআতী মোল্লাহ সমাচার


আসসালামু আলাইকুম। আশা করি ভাল আছেন।
মুসলমানের হাসি বইটি নিয়ে লেখা আমার ধারাবাহিক পোষ্টগুলোর এটি পরবর্তী পোষ্ট। পূর্ববর্তীগুলো নিচে দেওয়া হল। না দেখলে এখনই দেখে নিন।


    "বেদআতী মোল্লাহ সমাচার"

    অনেকে কথা আবিস্কার করে নিয়ে সেগুলি হেঁকে বেড়ায়। যাতে অজ্ঞ লোকদের মধ্যে সহজে প্রভাব বিস্তার করা যায়। উদ্দেশ্যে হলো হালুয়া-মিঠাই। রসনার তৃপ্তির জন্যেই এই সকল নষ্টামি চলছে। এরা নিজের দ্বীনকে খারাপ করেছে এবং মানুষকেও গোমরাহ করেছে। এরুপ এক বেদআতীর ঘটনা শোনা গেছে এক গ্রামে।

    * সেখানে একটি মসজিদ ছিল। সেই মসজিদে এক মোল্লা থাকতো এক বুড়ি সওয়াব রেসানীর উদ্দেশ্যে মোল্লার জন্য কিছু খাবার নিয়ে আসলো। ঘটনাক্রমে তখন মসজিদে মোল্লা ছিল না। এক মুসাফির সেখানে অবস্থান করছিল। বুড়ি প্রথমে মোল্লা মোল্লা করে আওয়াজ দিল। কিন্তু কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে ভাবলো খাবার খাওয়ানোর উদ্দেশ্য হলো সওয়াব লাভ করা। এই মুসাফিরকে দিলেও তো সওয়াব হবে। ঠিক আছে এই মুসাফিরকেই দিয়ে দিই। এই ভেবে খাবারগুলি মুসাফিরকে দিয়ে ফিরে চললো।
    মসজিদ থেকে বাহির হতেই দেখলো দরজায় মোল্লা এসে গেছে। বুড়িকে জিজ্ঞাসা করল, ‘ কি জন্যে এসেছিলে ?’
    বুড়ি বললো, ‘কিছু খাবার জিনিস এনেছিলাম তোমাকে না পেয়ে মুসাফিরকে দিয়ে যাচ্ছি।’
    এই কথা শোনা মাত্রই মোল্লা সাহেবের গায়ে যেন আগুন জ্বলে উঠলো। ভাবলো, এ দেখি এক নতুন রাস্তা খুলতে যাচ্ছে। এখনই এটা বন্ধ করা উচিৎ। না হলে আমার অস্থিত্ব বিলীন হবে।
    সুতরাং সে মসজিদে এসে হাতে একটি লাঠি নিয়ে মেঝেতে সজোরে বাড়ি কষতে লাগলো। সারা মসজিদে পাগলের মত ছুটাছুটি করে লাঠির আঘাত করতে করতে অবশেষে ধড়াম করে পড়ে গেল এবং মেঝেতে হাত-পা শাট করে শুয়ে থাকলো।
    ‘কি হল, কি হল’ বলে সারা গ্রামের লোক মসজিদে ভেঙ্গে পড়লো। মোল্লাকে ধরাধরি করে টেনে তুললো। এরপর জিজ্ঞাসা করলো, ‘কী হয়েছে মোল্লাজী, তোমার কী হয়েছে?’।
    মোল্লা বললো, ‘আমি এখানকার সব মুর্দাকে চিনি। মুসাফির সবাইকে চিনে না। তাই খাবার বিতরণ করার সময় অন্য গ্রামের মুর্দারকে দিয়েছে, প্রকৃত হকদার কিছুই পায়নি। মুসাফির বুঝতে পারেনি বলে তাকে কিছু বলেনি। কিন' যখন আমি আসলাম তখন সকল মুর্দা আমাকে ঘিরে ধরলো। এত ভয় দেখালাম, এত লাঠি মারলাম আর বললাম, যখন আমার হাতে দেয়নি তখন তোমাদেরকে আমি দিব কিভাবে ? কিন' আমার একটি কথাও শুনলো না, সবাই মিলে আমাকে চিৎ করে ফেলে দিয়ে বুকের উপর চড়ে বসলো। তোমার যদি এসে না ধরতা তবে আমার প্রাণ বধ করে ছাড়তো। কিন্তু তোমরা এভাবে আমাকে কতদিন রক্ষা করবা। তাই এখান থেকে চলে যাওয়াই ভাল।’
    বেচারা গ্রামবাসী একেবারে অসহায় হয়ে পড়লো। অত:পর সবাই একমত হয়ে বললো, ‘কোথাও যেয়ো না, এখন থেকে তোমার হাতেই সব খাবার দেওয়া হবে।’
    এইসব ভিত্তিহীন কথায় লোকগুলিকে বশ করে নিজের উদ্দেশ্য হাছিল করে নিল বটে, কিন' একটুও ভাবলো না যে এই লোকগুলি এরুপ বিশ্বাসের দ্বারা হেদায়াত প্রাপ্ত হবে না-কি গোমরাহীর গভীর অন্ধকারে হারিয়ে যাবে ?
    এই সকল জাহেল বেদআতী মোল্লাদের কারণেই এরা (হাক্বানী মোল্লারা) অনেকের দৃষ্টিতে তুচ্ছ এক প্রাণীতে পরিণত হয়েছে। 
    উদাহারণ স্বরুপ নিচের ঘটনা :-

    ক্ষীর খাওয়ার বিড়ম্বনা

    এক স্ক্রীলোক কিছু ক্ষীর রান্না করেছির। সবাই খাওয়ার পর বেঁচে থাকা ক্ষীরগুলি উঠানের এক কোণায় রেখে দিল। অত:পর তার ছোট ছেলেটিকে বললো, ‘যা, এগুলি মসজিদের মোল্লাকে দিয়ে আয়।’
    ছেলেটি যখন সেগুলি নিয়ে গেল তখন, কতকাল পরে না-জানি মোল্লা ক্ষীর দেখতে পেয়েছিল; তাড়াতাড়ি ওর হাত থেকে নিয়েই খেতে শুরু করে দিল।
    ছেলেটি বললো, ‘মোল্লাজী, ওপাশ থেকে খাবেন না, ও পাশে কুকুর খেয়েছে।’
    এই কথা শুনে মোল্লাজী ঘৃণা এবং রাগে হাত থেকে পাত্রটি ছুঁড়ে ফেলে দিল। পাত্র ভেঙ্গে টুকরা টুকরা হয়ে গেল। ছেলেটি ভয়ে কাঁদতে লাগলো।
    মোল্লা জিজ্ঞাসা করলো, ‘কাঁদছিস কেন ?’
    বললো, ‘পাত্রটি ভেঙ্গে ফেললেন, মা আমাকে মারবে।’
    মোল্লা বললো, ‘কুকুরে খাওয়া পাত্র ভেঙ্গে গেছে তা তাতে তোর মা মারবে কেন ?’
    ছেলেটি বললো, ‘ওটা আমার ছোট ভাইয়ের গু’ ফেলা পাত্র।’

    -আল এফাযাতুল এওমিয়্যাহ, খন্ড : ৪, পৃষ্ঠা : ১২১।

    0 comments:

    Post a Comment

     

    © 2009 Islam And Computing । Science without Religion is Lame, Religion without Science is Blind | Design by: Islam And Computing

    ^Back to Top