Tuesday, May 3, 2011

চোর দরবেশ

চোর দরবেশ

গুনাহ ছাড়। এবাদত শুরু করে দাও। তারপর দেখ অন-রের মধ্যে কত রকম শানি- ও সুখের ধারা প্রবাহিত হয়। আল্লাহ পাকের এবাদত এমন এক আশ্চর্য জিনিস যে অনিচ্ছা সত্ত্বেও যদি তা সম্পন্ন হয়ে যায় তবু তার সুফল পাওয়া যায়। যেমন কাপড় যদি ভুল করেও রঙের মধ্যে পড়ে যায় তবু তাতে রং লেগে যাবে। বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে একটি চোরের ঘটনা থেকে।
এক বাদশাহ ছিলেন। তার ছিল এক পরমা সুন্দরী কন্যা। এক চোর সেই কন্যার উপর আশেক ছিল। কিন' তাকে পাওয়া বড় কঠিন ব্যাপার ছিল।
ঘটনাক্রমে একদিন সে চুরি করার উদ্দেশ্যে বাদশাহর ঘরে প্রবেশ করলো। তখন বাদশাহ এবং বেগম তাদের মেয়ের বিবাহের ব্যাপারে আলোচনা করছিলেন।
বাদশাহ বললেন, ‘আমাদের মেয়ের বিবাহ দিব আল্লাহওয়ালা, পরহেজগার লোকের সাথে।’
চোর এই কথা শুনে চুরি করা ভুলে গেল এবং বাদশাহর সিদ্ধানে-র কথাকে এক বিরাট গণীমত মনে করলো যে তার প্রিয়তমাকে পাওয়ার সঠিক ব্যবস্থা জানা হয়ে গেছে। এখন পরহেজগার হয়ে যাওয়াই ভাল।
বাদশাহর ঘর থেকে বাহির হয়ে সে এক মসজিদে গিয়ে বসলো এবং রাত দিন আল্লাহর এবাদতে মশগুল হয়ে পড়লো। ফলে তার খ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লো যে একজন খুব বড় দরবেশ এসেছে।
এদিকে বাদশাহ তার শাহযাদীর বিবাহের পাত্র খোঁজার জন্যে লোক লাগিয়ে দিলেন। পরহেজগার পাত্র খোঁজার জণ্যে চারিদিকে লোক ছুটলো। অনেক খোঁজাখুজির পর অবশেষে জানা গেল যে, অমুক মসজিদে এমন এক আল্লাহওয়ালা আছেন যার চেয়ে অধিক মুত্তাকী সারাদেশে আর একটিও নাই।
সুতরাং বিশেষ ব্যবস'াপনায় বিবাহের পয়গাম নিয়ে বাদশাহর দূত তার কাছে গিয়ে হাজির হলো। কিন' চোরের কাজ ততদিনে সারা হয়ে গিয়েছিল। আল্লাহর এবাদতের শানি-তে তার অন-র এত ভরপূর হয়ে উঠেছিল যে, রাজকন্যা এবং সাত রাজার ধনও তার কাছে তখন তুচ্ছ মনে হতে লাগলো।
সে দূতকে বললো, ‘আপনারা যান, আমার সময় নষ্ট করবেন না।’
-তাসহীলুল মাওয়ায়েজ, খন্ড: ১, পৃষ্ঠা: ৪৯।

এ প্রসঙ্গে সুফিয়ান সাওরী (র:) বলেন :
“এলেম শিখেছিলাম গায়রুল্লাহর উদ্দেশ্যে, অত:পর এলেম অস্বীকার করলো আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর জন্যে হতে।”

0 comments:

Post a Comment

 

© 2009 Islam And Computing । Science without Religion is Lame, Religion without Science is Blind | Design by: Islam And Computing

^Back to Top