Tuesday, November 15, 2011

ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি | যখন আপনাকে কেউ গালাগালি করে তখন আপনি কি করবেন?


হযরত আবু হুরায়রা (রা: ) হইতে বর্ণিত আছে,
  নবী করিম (সা) একদা বসিয়াছিলেন, তাহার উপস্থিতিতে এক ব্যক্তি হযরত আবু বকর (রা) কে গালি দিল। তিনি (ঐ ব্যক্তির বার বার গালি দেওয়া এবং হযরত আবু বকর (রা) এর সবর ও খামুশ থাকার উপর) খুশী হইতে থাকেন এবং মুচকি হাসিতে থাকেন। অত:পর যখন সেই ব্যক্তি অনেক বেশী গালিগালাজ করিল তখন হযরত আবু বকর (রা) তাহার কিছু কথার জবাব দিলেন। ইহার উপর রাসুল (সা) অসন্তুষ্ট হইয়া সেখান হইতে চলিয়া গেলেন। হযরত আবু বকর (রা) ও তাহার পিছনে পিছনে তাহার নিকট পৌঁছিলেন এবং আরজ করিলেন, ইয়া রাসুলুল্লাল্লাহ (সা)! (যতক্ষণ) ঐ ব্যক্তি আমাকে গালি দিতেছিল আপনি সেখানে অবস্থান করিতেছিলেন, তারপর যখন আমি তাহার কিছু কথার জওয়াব দিলাম তখন আপনি নারাজ হইয়া উঠিয়া গেলেন। রাসুল (সা) এরশাদ করিলেন, (যতক্ষণ তুমি চুপ ছিলে এবং সবর করিতেছিলে তোমার সহিত একজন ফেরেশতা ছিল, যে তোমার পক্ষ হইতে জওয়াব দিতেছিল। তারপর যখন তুমি তাহার কিছু কথার জওয়াব দিলে (তখন সেই ফেরেশতা চলিয়া গেল আর) শয়তান মাঝখানে আসিয়া গেল। আর আমি শয়তানের সহিত বসি না। (এই জন্য আমি উঠিয়া রওয়ানা হইয়া গিয়াছি) ইহার পর তিনি এরশাদ করিলেন,  হে আবু বকর! তিনটি বিষয় আছে যাহা সম্পূর্ণ হক ও সত্য যে বান্দার উপর কোন যুলুম অথবা সীমালন্ঘন করা হয় আর সে শুধু আল্লাহ তায়ালার জন্য উহা মাফ করিয়া দেয় (ও প্রতিশোধ না লয়) তখন উহার বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা তাহাকে সাহায্য করিয়া শক্তিশালী করিয়া দেন। যে ব্যক্তি আত্মীয়তা বজায় রাখার জন্য দানের রাস্তা খোলে আল্লাহ তায়ালা উহার বিনিময়ে অনেক বেশী দান করেন। আর যে ব্যক্তি সম্পদ বৃদ্ধি বরার জন্য সওয়ালের দরজা খোলে আল্লাহ তায়ালা তাহার সম্পদ আও কমাইয়া দেন। 
(মুসনাদে আহমদ)
Read More ... »

Saturday, September 10, 2011

মুসলমানের আদব : নিজে যাহা খাইবে, তাহাই দাসকে খাওয়াইবে


জাবির ইব্‌ন আব্দুল্লাহ (রা.) বলেন, নবী করীম (সা.) ক্রীতদাসদের সহিত উত্তম আচরণ করার জন্য তাগিদ করিতেন এবং বলিতেন, তোমরা যাহা খাও, তাহাদগিকেও তাহাই খাওয়াইবে এবং তোমরা যাহা পরিধান কর, তাহাদিগকেও তাহাই পরাইবে এবং আল্লাহ তা’আলার সৃষ্ট জীবনসমূহকে কষ্ট দিবে না।

কোন ব্যক্তি আহারের সময় তার খাদেমকেও কি তার সাথে বসাবে ?
 
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হইতে বর্ণিত আছে  যে, রাসুল (সা.) ফরমাইয়াছেন, যখন তোমাদের মধ্যকার কাহাকেও খাদেম তাহার আহার্য নিয়া তাহার কাছে আসে, তখন তাহাকেও সাথে বসাইয়া নেওয়া উচিত। সে যদি উহাতে সম্মত না হয়, তবে তাহাকে উহা হইতে কিছু দিয়া দেওয়া উচিত।

আবূ মাহ্‌যূরা (র.) বলেন, আমি হযরত উমর (রা.) র দরবারে উপবিষ্ট ছিলাম। এমন সময় সাফ্‌ওয়ান ইব্‌ন উমাইয়া (রা.) একটি বিরাট পাত্র সহকারে তথায় আসিয়া উপসি'ত হইলেন। পাত্রটি একটি পশমী চোগায় করিয়া কয়েক ব্যক্তি বহন করিয়া আনিয়াছিল। তাহারা ইহা আনিয়া হযরত উমর (রা.)-র সম্মুখে রাখিল। তখন হযরত উমর (রা.) দুস'-দরিদ্র লোকজনকে এবং তাহার নিকটস' লোকজনের দাসদিগকে ডাকিলেন। তাহারা তাঁহার সহিত একত্রে বসিয়া আহার করিল। তখন তিনি বলিলেন, আল্লাহ এমন একটি সমপ্রদায়কে ধ্বংস করিয়া দিয়াছেন অথবা তিনি বলিয়াছেন, আল্লাহ এমন একটি সমপ্রদায়কে অপদস' করিয়াছেন যাহারা তাহাদের দাসদের সহিত খাইতে অনিচ্ছুক, তাহাদের প্রতি বিমুখ ছিল। তখন সাফ্‌ওয়ান বলিলেন, কসম আল্লাহর! আমরা তাহাদের প্রতি বিমুখ নহি বরং তাহাদিগকে আমাদের মুকাবিলায় অগ্রাধিকার দিয়া থাকি। কসম আল্লাহর! আমরা এমন কোন উত্তম খাবার পাই না যাহা নিজেরা খাইব এবং তাহাদিগকে খাওয়াইব।
[আল আদাবুল মুফরাদ, অনুচ্ছেদ ১০১]

Read More ... »

Thursday, September 1, 2011

আসলে কি নারী উন্নয়ণ নীতিমালায় ইসলাম বিরোধী কিছু আছে ?


আমরা মুসলমান। ইসলাম আমাদের ধর্ম। আল্লাহ আমাদের রব। কুরআন আল্লাহ তা’আলার কালাম, আসমানী গ্রন্থ, আমাদের সংবিধান। মুসলমান মাত্রই বিশ্বাস করে যে, আল্লাহর কালাম “কুরআন” সব সন্দেহ-সংশয় ও ভুল ত্রুটির উর্দ্ধে। কিয়ামত পর্যন্ত এতে কোন সংশোধন, সংস্কার, সংযোজন-বিয়োজন করা যাবে না।
নারী-পুরুষ মহান আল্লাহর রাব্বুল আলামীনের সৃষ্টি। উভয়ই আল্লাহ তাআলার বান্দা-বান্দী। আর সৃষ্টির ভাল-মন্দ স্রষ্টা ভাল জানেন। পবিত্র কুরআন পাকে ইরশাদ হচ্ছে, ‘যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি কি জানেন না ? অথচ তিনিই সূক্ষ্মদর্শী ও সবকিছুর ব্যাপারে সম্যক অবগত।’ (সূরা মূল্‌ক : ১৪)
আল্লাহ তাআলা তাঁর এ জানার আলোকেই সৃষ্টি করেছেন নারী-পুরুষ। এবং প্রত্যেককে যার যার কাজ ও দায়-দায়িত্ব হিসেবে দিয়েছেন মেধা, মনন, মানসিকতা ও শারীরিক গঠন। নারী মা হবেন। এজন্য মাতৃত্বের যাবতীয় গুণাবলী দিয়ে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। যেসব গুণাবলী পুরুষের মধ্যে নেই। আর পুরুষ বাবা হবেন। এজন্য সৃষ্টিগতভাবে আল্লাহ তা’আলা পুরুষের মধ্যে পিতৃত্বের যাবতীয় গুণাবলী দিয়েছেন। যা নারীদের মধ্যে সহজাতভাবে নেই। সুতরাং নারী-পুরুষের মধ্যে জন্মগতভাবেই পার্থক্য আছে। আছে ভিন্নতা। যেমন নারীর কাজ হলো- গর্ভে সন্তান ধারণ, সন্তান প্রজনন, স্থন্য দান ও সন্তান লালন-পালন। আর পুরুষের কাজ হলো- মা ও সন্তানের যাবতীয় ভরণপোষণের খরচ বহন ও এর ব্যবস্থাকরণ। সুতরাং স্বাভাবতই কর্মের ভিন্নতার কারণে নারী-পুরুষের কর্মক্ষেত্রেরও ভিন্নতা এসে যায়। আর তা হলো- নারীর কর্মক্ষেত্র হল ঘর; পুরুষের কর্মক্ষেত্র বাহির। এজন্য কুরআন বলে, “নারীরা! তোমরা ঘরে অবস্থান কর”। অন্যত্র পুরুষদের বলা হয়েছে, “তোমাদের নামায আদায় হয়ে গেলে বের হয়ে যাও ও আল্লাহর দেওয়া রিযিক তালাশ কর”। এ হলো নারী-পুরুষের সহজাত ভিন্নতা ও পার্থক্য।

সহজাত এসব ভিন্নতার কারণে নারী-পুরুষের বিধি-বিধান ভিন্ন, নিয়মনীতি ভিন্ন। সমপ্রতি বাংলাদেশে বহুল আলোচিত সমালোচিত নারী উন্নয়ন নীতিমালা যা গত ৭ই মার্চ মন্ত্রীসভায় অনুমোদিত হওয়ার পর উলামায়ে কেরাম কুরআন, সুন্নাহ ও ইসলামী শরীয়ার সাথে সাংঘর্ষিক বলে এ নীতিমালা বাতিল করার দাবী তুলেছেন। সে নালী নীতিমালা জাতিসংঘের প্রণীত সিডও (নারী-পুরুষের বৈষম্য দূরীকরণ)’রই প্রতিধ্বণি মাত্র। এ নীতিমালায় বারবার এ কথা বিবৃত হয়েছে যে, সিডও-র প্রচার ও বাস্তবায়ন করতে হবে। এমনকি প্রয়োজনে সিডও বাস্তবায়নে দেশীয় আইন সংশোধন, পরিবর্তন বা নতুন আইন প্রণয়ন করতে হবে। সিডও’র মূল বক্তব্য হল দু’টি :
১। নারী পুরুষের সকল বৈষম্য দূর করা।
২। সর্বক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠা করা।
এ দু’টো মূল কথাই ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক। বরং মানবতা ও সৃষ্টিশৈলী বিরোধী। নারী-পুরুষের সকল বৈষম্য দূর করে সকল ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা করা কি আদৌ সম্ভব? এটা কি আদৌ কোনো যুক্তিসঙ্গত কথা?  কোন সুস্থ বিবেক সম্পন্ন মানুষ কি এমন দারী তুলতে পারে? এরপরও এদেশের এম.পি. মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত বলেছেন যে, নারী নীতিমালায় ইসলাম বিরোধী কিছুই নেই। আমরা বলব, যেহেতু এ নীতিমালা সিডও’রই প্রতিচ্ছবি বাস্তবায়নের অঙ্গীকারের একটি কৌশল মাত্র আর সিডও’র লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও মূল চিন্তা-চেতনা ইসলামী চিন্তা-চেতনার সম্পূর্ণ পরিপন্থী, সেহেতু এ নারী উন্নয়ন নীতিমালা পুরোটাই ইসলাম বিরোধী। অবশ্য নীতিগত দিকটা পাশ কেটে গেলেও ইসলামী বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় এ নীতিমালায় কমপক্ষে ১৯টি ধারা/উপধারা কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী। এর মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য কয়েকটি ধারা এখানে তুলে ধরছি।
  •    ইসলাম পৈতৃক উত্তরাধিকারে নারীকে পুরুষের অর্ধেক দিয়েছে। আর এ নীতিমালায় নারীকে পুরুষের সমান দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
  •    নারী নীতিমালার ১৮.১ এ বলা হয়েছে, বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে আইনের কঠোরতা প্রয়োগ করা। অথচ ইসলামে বাল্যবিবাহের ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করলেও অভিভাবক কর্তৃক সম্পাদিত হলে কঠিন শর্ত সাপেক্ষে এর বৈধতা অনুমোদন করে। এ নীতিটি ও কুরআন-সুন্নাহ এমনকি রাসূল (স.) এর আমলের সাথেও সরাসরি সাংঘর্ষিক।
  •   নীতিমালার ৭.২ ধারাতে আছে, “মা কর্তৃক সন্তানকে নাগরিকত্ব প্রদানের বিধান সন্নিবেশিত করা হলো”। অথচ কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, “তোমরা তাদেরকে তাদের  পিতৃ পরিচয়ে ডাক। এটাই আল্লাহ তাআলার কাছে ন্যয় সঙ্গত”। নীতিমালার এ ধারাটিও সপ্‌মূর্ণ কুরআন-সুন্নাহ’র সাথে সাংঘর্ষিক। মুসলমানদের এদেশে বৈধ বিবাহের মাধ্যমে সন-ান হয়। এদেশের ৯৫% মানুষের পিতৃ পরিচয় আছে। তারা হালাল ও বৈধ সন্তান। সুতরাং মাতৃ পরিচয়ে পরিচিত হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। অবশ্য সিডও’র ভূক্ত পশ্চিমা দেশগুলোতে এ নীতির প্রয়োজন থাকতে পারে। সেখানকার অধিকাংশ মানুষই পিতৃ পরিচয়হীন। দেশে এ নীতি চালু হলে ‘লিভ টুগেদার’ আস্কারা পেয়ে যাবে। ফলে এদেশেও জারজ সন-ানের পরিমাণ বেড়ে যাবে ও ইসলামের পারিবারিক কাঠামো ভেঙ্গে যাবে। যা আজ পশ্চিমা দেশগুলোর সামাজিক চিত্রে দেখা যাচ্ছে।
  •   সুদীর্ঘ এ নীতিমালার কোথাও নারীর ইজ্জত-সম্ভ্রম হিফাজতের আসমানী রক্ষাকবজ পর্দা বিধানের কথা উল্ল্যেখ নেই। বরং উল্টো নারীকে ঘর ছাড়া করা ও টেনে বাহিরে নিয়ে আসার কথা আছে একাধিক স্থানে। সুতরাং নারী বেপর্দা হওয়া ও বাহিরমুখী হওয়া সম্পূর্ণ কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী। দেশে এ নীতি চালু হলে ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন, যৌন হয়রানী, ইভটিজিং শতগুণে বেড়ে যাবে। যেমন নীতিমালার ২২.৩ এ আছে, “সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে নারীর বর্ধিত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।”
  •   ২২.৪ ধারায় নাটক ও চলচ্ছিত্র নির্মাণে (যেখানে বেগানা পুরুষের সাথে মেলামেশা করতে হয় এবং যা ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ) নারীকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে সরকারি অনুদানের ব্যবস্থা করা। এছাড়াও এ নীতিমালা এ নীতিমালায় যৌতুক ও পতিতাবৃত্তির প্রতি উস্কে দেওয়া হয়েছে।

* শাকদিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা *
  • নীতিমালার ২৩.৫ ধারায় আছে, “সম্পদ, কর্মসংস্থান বাজার ও ব্যবসায় নারীকে সমান সুযোগ ও অংশীদারিত্ব দেওয়া।”
  • ২৫.২ এ আছে “উপার্জন, উত্তরাধিকার এবং বাজার ব্যবস্থার মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের ক্ষেত্রে নারীকে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রদান করা। বোধ হয় এ দু’টো ধারা থেকেই নীতিমালা অনুমোদিত হওয়ার পরদিন বেতার, টেলিভিশনসহ পত্র-পত্রিকায় বিশেষভাবে দেশের প্রধান জাতীয় পত্রিকা তথা- প্রথম আলো, যুগান্তর ও কালের কান্ঠে খবর প্রচার করা হয় এভাবে : “ভূমিসহ সম্পদ-সম্পত্তিতে ও উত্তরাধিকারে নারীর সমান অধিকার স্বীকৃতি দিয়ে নারী উন্নয়ন নীতিমালা ২০১১ খসড়া অনুমোদন করেছে সন্ত্রীসভা”। দেশের বিজ্ঞ আলেম-উলাম ও ইসলামী বিশেষজ্ঞগণ ঠিক তাই বুঝেছেন যা বুঝেছে বাসস সহ প্রায় সব পত্র-পত্রিকা কর্তৃপক্ষ। পত্রিকার এসব শিরোনামের উপর সরকার পক্ষের কেউ কোন প্রতিবাদ করেনি। কিন্তু যখনই আলেম-ওলামাগণের  পক্ষ থেকে বলাবলি শুরু হল যে এটা কুরআনের সাথে সাংঘর্ষিক তখনই সরকার ২৩.৫ “সম্পদ” শব্দের অস্পষ্টতার সুযোগ নিয়ে জনগণকে বোকা বানানোর অপকৌশল অবলম্বন করল আর বলল,এখানে সম্পদ বলা হয়েছে উত্তরাধিকারের কথা বলা হয়নি। এক পর্যায়ে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও বলে ফেললেন যে, “নীতিমালায় ইসলাম বিরোধী কিছু নেই।”
অযথা কথা বাড়িয়ে গোজামিল দেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করবেন না। সাহস থাকলে পরিষ্কার ভাষায় উল্ল্যেখ করে দিন যে, “পৈতৃক সম্পদের ক্ষেত্রে কুরআন-সুন্নাহ মাফিক বন্টন হবে।” সব ঝগড়া মিটে যাবে। মু’মিন-মুসলমানের প্রাণের দাবী পূরণ হবে।
এছাড়া সবক্ষেত্রে নারীর সমান অধিকারের ঘোষণার মাধ্যমে মুসলিম উত্তরাধিকার আইনকে অকার্যকর করাই যে সিডও’র সনদের মূল টার্গেট তাতো অন্ধদেরও সহজেই অনুমেয়।
নারী উন্নয়ন নীতিমালা ২০১১  এর মূল ফাইলটি এখান থেকে ডাউনলোড করে নিন।

Read More ... »

Sunday, August 7, 2011

রমজান উপলক্ষ্যে হুযুর (সা.) এর ভাষণ :



হযরত সালমান ফারসী (রা.) বর্ণনা করেন, 
একদা নবী করীম (সা.) শাবানের শেষ তারিখে আমাদেরকে সম্বোধন করে বলেন, তোমাদের উপরে এমন একটি মাস আগমন করছে যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রবকতময় মাস, উক্ত মাসে একটি রাত রয়েছে (শব-ই-ক্বদর) যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম আল্লাহ তাআলা উক্ত মাসের রোযা ফরজ করেছেন এবং রাত্রে ক্বিয়াম করাকে (তারাবীহ) সাওয়াবের ইবষয় বানিয়েছেন যে কেউ এই মাসে একটি নফল ইবাদাত করল সে কেমন যেন অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করল, আর যে একটি ফরজ পালন করল সে কেমন যেন অন্য মাসে সত্তরটি ফরজ আদায় করল এটি হচ্ছে সবরের মাস আর সবরের বিনিময়ে রয়েছে জান্নাত এই মাস হচ্ছে সহমর্মিতার মাস, এই মাসে মু’মিনের রিযিক বাড়িয়ে দেয়া হয় যে কেউ অন্য কাউকে ইফতার করাবে এটা তার জন্য গোনাহ মাফ এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির কারণ হবে রোযাদার ব্যক্তির সাওয়াবের মত পূর্ণ একটি সওয়াব সেও প্রাপ্ত হবে অথচ রোযাদারের সাওয়াব বিন্দুমাত্রও হ্রাস পাবে না

সাহাবায়ে কেরাম আরয করলেন, 
হে আল্লাহর রসুল (সা.)!  আমাদের মধ্যে তো অনেকেরই এমন সামর্থ নেই যে, অন্যকে ইফতার করাবে অর্থা পেট ভরে খাওয়াবে হুযুর (সা.) এরশাদ করলেন, এটা পেট ভরে খাওয়ার উপর নির্ভরশীয় নয় বরং এই সাওয়াব তো সেই ব্যক্তিও প্রাপ্ত হবে, যে একটি খেজুর কিংবা এক ঢোক পানি অথবা এক ঢোক দুধও পান করাবে এটি এমন একটি মাস যার প্রথম ভাগ হচ্ছে রহমত, মধ্যভাগ মাগফিরাত এবং শেষ ভাগে রয়েছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি যে ব্যক্তি এই মাসে স্বীয় চারক-নকারের কাজের চাপ কমিয়ে দিবে আল্লাহ তাআলা তাকে মাফ করবেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিবেন এই মাসে চারটি কাজ বেশী বেশী করে করবে তার মধ্যে দুটি জিনিস হচ্ছে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য, আর দুটি জিনিস এমন যা ছাড়া তোমাদের কোন গতি নেই প্রথম দুটি জিনিস যদ্বারা তোমরা স্বীয় প্রতি পালককে সন্তুষ্টি করবে, তা হচ্ছে কালিমায়ে তাইয়্যিবা এবং ইসতিগফার বেশী বেশী পড়া, আর অপর দুটি জিনিস হল,  জান্নাতের কামনা এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি প্রার্থনা যে ব্যক্তি কোন রোযাদারকে পানি পান করাবে আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তাকে আমার হাউজে কাওসার থেকে এমন পানি পার করাবেন যে, জান্নাতে প্রবেশ করা পর্যন্ত তার আর পিপাসা অনুভূত হবে না

(সহীহ ইবনে খুযাইমা, বাইহাকী, তারগীব তারহীব – ২০৩)



Read More ... »

Wednesday, June 29, 2011

নিজের সাথেই বিশ্বাসঘাতকতা ও স্বার্থপরতা

আম্মু, ভাইয়া আমার পেন্সিল নিয়ে গেছে। ছোট্ট শিশুর এই অভিযোগ শুনলে এখন থেকে ১৫ বছর আগের একজন মায়ের অভিব্যক্তি হতো অনেকটা এরকম: তাই? দাঁড়াও আজকে ভাইয়াকে দেখাচ্ছি মজা, আমার ছোট্ট মনিটার পেন্সিল নিয়ে যায় কত বড় সাহস!! তখন বড় ছেলেকে রিকোয়েস্ট করে পিচ্চি মেয়েটার কাছে আবার তার পেন্সিল ফেরত দেয়া। কিন্তু ঠিক এই ২০১১ সালের একটি সন্ধ্যায় যদি এমনই অভিযোগ কোন পিচ্চি মেয়ে তোলে তাহলে তাকে যা শুনতে হয় তা হচ্ছে: মামনি, আম্মু টিভি দেখছি, এখন যাও, পড়তে বসো, পড়ে শুনবো। আর যদি মেয়েটি আরেকটু ঘ্যান ঘ্যান করে তখন তুমুল ঝাড়ি, দেখছোনা বেয়াদব মেয়ে, আমি টিভি দেখছি, এখন কেন ডিস্টার্ব করছ? যাও বুয়াকে গিয়ে বল।

দুটোই একটি মায়ের চরিত্র। ২০১১ সালের মায়ের চেয়ে ১৯৯৫ সালের মায়ের সন্তানের প্রতি দরদ খুব যে বেশি ছিল তা কিন্তু নয়। বরং সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসা যুগের পর যুগ অপরিবর্তিত ভাবেই থাকবে। কেবল ধরনটা একটু চেঞ্জ হচ্ছে। এবার আসুন আমরা মায়ের সেই বক্তব্যটির একটু পর্যালোচনা করি। “ দেখছোনা বেয়াদব মেয়ে?” কেবল এই একটি  বাক্যই মা সম্পর্কে শিশুর শ্রদ্ধাবোধ উঠিয়ে নেয়ার জন্য যথেষ্ট, কেননা একটি শিশু মাকেই পৃথিবীতে তার সকল আবদার অভিযোগের একমাত্র কেন্দ্র মনে করে। কিন্তু যখন সে সেখানেও তার মনের ব্যথা বা আকুলতা প্রকাশ করতে পারছেনা তখন? দেখুন, পেন্সিল নিয়ে যাওয়া বিষয়টি আমাদের মত বড়দের কাছে একটি তুচ্ছ ঘটনা। কিন্তু চাইল্ড সাইকোলজিতে তার কাছে ওটাই অনেক বড় একটি ব্যাপার। আমার এখনো মনে পড়ে ছোট বেলায় একটি কলমের গায়ের ডিজাইন হাতের ঘর্ষণে উঠে যাবে বলে স্কচ টেপ পেঁচাতে চেয়েছিলাম। আমার এক স্যার বললেন তুমি ঠিক ভাবে পেঁচাতে পারবেনা, আমার কাছে দাও। আমি তার কাছে দিয়ে নিশ্চিন্ত হলাম, কিন্তু দেখলাম পেঁচাতে গিয়ে উনি ভ্যাজাল বাঁধিয়ে টেপটাকে আবার উঠিয়ে লাগাতে নিচ্ছিলেন, আর আমার সাথের সব ডিজাইন টেপের আঠার সাথে লেগে উঠে যাচ্ছিলো। এবং এই বেদনা আমি অনেকদিন পর্যন্ত মনে রেখেছিলাম। এখন সেসব মনে পড়লে হাসি আসে, কিন্তু গভীর ভাবে ভাবলে বুঝি ওটাই তখন আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে অনেক বড় একটি যায়গা দখল করে ছিল।

এবারে যদি সেই মায়ের “আমি টিভি দেখছি” কথাটিকে পর্যালোচনা করি তাহলে কিছু ভয়ংকর বিষয় আমাদের চোখের সামনে চলে আসবে। যারা তা সহ্য করার ক্ষমতা রাখেননা তাদেরকে এক্ষুণি চোখ বন্ধ করে সড়ে পড়ার অনুরোধ করবো। কারণ যারা এই লেখাটি পড়ছেন তারা না হলেও তাদের খুব কাছের অনেক স্বজনেরাই এভাবে টিভির প্রতি আসক্ত। আমাদের সন্তানেরা ড্রাগে আসক্ত হলে আমরা প্রচণ্ড রেগে যাই কিংবা তাকে তুচ্ছ নগণ্য হিসেবে গণ্য করি। কিন্তু আমার কাছে টিভিতে আসক্তির চেয়ে ড্রাগে আসক্ত হওয়াই বেশি কল্যাণকর মনে হয়। কারণ ড্রাগতো কেবল শরীরটাকে ধ্বংস করে যদিও মনে এর কিছুটা প্রভাব পড়ে, কিন্তু টিভি আসক্তি মন মগজ মেধা এমনকি শরীরকেও একই সাথে ধ্বংস করে দেয়। আবার দেখুন, ড্রাগ আসলে কোন খারাপ কিছু নয় বরং জীবন রক্ষাকারী একটি উপাদান। কিন্তু এর ব্যাবহারিক মাত্রা এর উপযোগিতাকে অতিক্রম করলেই তা প্রাণনাশ। ঠিক তেমনি টিভি একটি চরম উপকারী বিষয় কিন্তু এর প্রায়োগিক ও ব্যবহারিক মাত্রা যদি উপযোগিতাকে অতিক্রম করে বসে তখনই পারিপার্শ্বিক জগতের জন্য ভয়াবহ হুমকি ডেকে আনে। আমরা যদি তাকাই সেই দিকে, অর্থাৎ আমাদের আলোচনার “মা” কি এতো মহা গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান দেখছ যে তার সন্তানকে সেই অনুষ্ঠানের জন্য ঝাড়ি খেতে হচ্ছে? মহান সিরিয়াল। যার শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই। এইসব ধারাবাহিকে মানব জীবনের জন্য মহা উপকারী পাঠ প্রদান করা হয়। যেমন এগুলোতে আপনি খুঁজে পাবেন পরকীয়া করার চমৎকার চমৎকার সব উপায়। এবং কুটনামী এবং প্যাঁচ লাগানোর যতসব আধুনিক পন্থা, সংসারে সাক্ষাত ঝামেলা পাকানোর আধুনিকতর রেসিপি। পরনিন্দা ও পরচর্চা করার খুব উন্নত প্রশিক্ষণ। আমরা ভাবছি এসব দেখে আমাদের খুব তো ক্ষতি হচ্ছেনা, বরং বিনোদন হিসেবে একাকী সময় কাটানোর মহতী উদ্যোগ। কিন্তু ক্ষতি কতটুকু হচ্ছে তা রিসেন্ট পত্র পত্রিকা খুললেও পরিষ্কার হয়ে যায়। যদিও পত্রিকার খবরে ঈমান রাখার কোন জরুরত নেই কেননা বিক্রি বাড়াতে এরা আজ একরকম তো কালই আরেকরকম সংবাদ ছাপাতে কুণ্ঠা বোধ করেনা, কিন্তু এইসব ঘটনা যে ঘটছে তা তো সত্য। খবরের কাগজে রিপোর্ট হচ্ছে মাত্র দু/একটির বাকি শত শত ঘটনা প্রতিদিন লোকলজ্জার ভয়ে আমরা চাঁপা দিয়ে বুক ভরা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে কাটিয়ে দেই ঘুমহীন রাতগুলো। আর প্রতিদিনই ধোঁকা দিয়ে চলছি নিজেই নিজেকে।

এখন যদি আমরা বলি যে মায়ের পরবর্তী বাক্য “ এখন কেন ডিস্টার্ব করছ?” এটা চরম অমানবিক তাহলে কি আমাকে খুব বেশি দোষ দেয়া যাবে? একটি শিশু প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে তার মায়ের কাছেই ছুটে যাবে, তার সকল আকুতি কিংবা আনন্দানুভূতি তার মাকেই বলবে- এটাই তো নিয়ম তাই না? কিন্তু যখন সে তার মায়ের কাছ থেকে তা না পায় তাহলে আমরা কি করে আশা করবো মায়ের শিশুকালে (বার্ধক্যে মানুষ আবার শিশু হয়ে যায়) সে পরম যত্নে টেক কেয়ার করবে? আমাদের এইসব কর্মকাণ্ডই আমাদেরকে এমন একটি পৃথিবীর দিকে নিয়ে যাচ্ছে যেখানে মায়া মমতা ও ভালোবাসা বলে কিছু থাকবেনা, মানুষ কেবল রবোটিক একটি জীবনে অভ্যস্ত থাকবে। আর হাসি আনন্দের জন্য ভাঁড় এবং টিভিতে কৌতুক আইডলের প্রোগ্রাম করে জীবনকে সামান্য রসাত্মক করার প্রচেষ্টা চলবে।

মায়ের শেষ বাক্যটি কি ছিল মনে পড়ছে? “যাও বুয়াকে গিয়ে বল” এর মাঝে অনেকগুলো বিষয় রয়েছে। অবশ্যই আমরা আমাদের বাসার বুয়াদেরকে মানবিক সম্মান দেখাই, এবং তাদেরকে যথেষ্ট সমাদর করেই চলি কিন্তু যখন সমাজের শিক্ষিত শ্রেণীর শিশুটি অশিক্ষিত একটি বুয়ার কাছ থেকে জীবনের পাঠ নেয় তখন তার আচরণে কেন আমরা অসন্তুষ্ট হবো? সন্তান অনির্ভর যোগ্য স্থান থেকে নানান শিক্ষা এবং আচরণ শিখছে সে বিষয়ে আমাদের খুব একটা উদ্বেগ একেবারেই নেই। যেন বেঁচে গেলাম। ডে কেয়ার তো মনেহয় যেন এক একটা কয়েদখানা। হয়তো শিশুটি বুঝতে পারছেনা তার নিজের পরাধীনতা সম্পর্কে কিংবা তার প্রকাশ করার জ্ঞান নেই। অথচ মায়ের বুকের উষ্ণতা বঞ্চিত সেই একই শিশুর বড় কালের আচরণে আমরা কষ্ট পাই। কেন? কিসের কষ্ট? যখন আমি আদর দিইনি তখন খেয়াল ছিলোনা, আর যখন আমার বুকে লাথি ছুড়ে দিচ্ছে তখনই ছেলে ভালো না—বেয়াদব!!

মনে করা হয় মায়ের এবং বাবার উভয়ের কর্মমুখী জীবনই হয়তো এর জন্য দায়ী, কিন্তু বিষয়টি আসলে তা নয়। চাকুরী করে যাচ্ছে এমন অনেক সচেতন বাবা মা দেখেছি যারা তাদের সন্তানদেরকে সচেতন ভাবে গড়ে তুলছেন। অবশ্য সেই সাথে একটি বিষয়ও খেয়াল রাখা উচিৎ আমরা সম্পদের মোহে কর্মের মাঝে এতোটাই মগ্ন হয়ে যাই যে আমরা নিজেদের কাজে কর্মে নিজেদেরকে টাকা উঠানোর একটি এটি-এম মেশিনের সাথে খুব একটা ফারাক রাখিনা। ভুলে যাই—আসলে আমিও একজন মা, কিংবা বাবা।

ভুলে যাই এডাল্ট লাইফের ব্যস্ততায় একটি কোমল ভবিষ্যতের ভিত নির্মাণের কথা। নিজেদের সাথে নিজেদের এই বিশ্বাসঘাতকতা আরও কতকাল চলবে আমাদের? আমরা নিজেরাই নিজ হাতে গড়ে তুলি এক একটি প্রজন্ম, নিজেদের সাথে নিজেদের এই স্বার্থপরতা আর কতকাল চলবে?

পূর্বে প্রকাশিত
Read More ... »
 

© 2009 Islam And Computing । Science without Religion is Lame, Religion without Science is Blind | Design by: Islam And Computing

^Back to Top